Skip to main content

আমার কলকাতায় আমার দেখা, পর্ব ২ ....

পর্ব ২ ....
যখন মার হাত ধরে মামার বাড়ি গেছি, তখন মা কে অটো রিকশা ওয়ালা দের জুলুম সহ্য করতে হতোনা, থাকতো হাত বাড়ালেই হাত এ টানা, পায়ে চলা রিকশা.
মামা বাড়ি ছিলো বড়ো রাস্তা থেকে প্রায় 2km ভেতর এ, সঙ্গে টাকা থাকতো, কিন্তু সেটা বাঁচানোর ইচ্ছে থাকতো আরো বেশি,মনে আছে তখন অবাক হয়ে ভাবতাম রিকশা ওয়ালা গুলো ওই ইয়াব্বড় রিকশা টেনেও আমাদের থেকে আগে কি করে পৌঁছে যেত...ইচ্ছে হতো দৌড়ে ওদের কে হারাতে, কিন্তু মার আঙ্গুল ছাড়া বারণ ওই ভিড় রাস্তায়.
তারপর এলো আমাদের পাড়ায় সাইকেল রিকশা, আরো তাড়াতাড়ি যায়. আমাদের দিকে, মানে দক্ষিণ কলকাতায় হাত টানা রিকশা ছিল বারণ, ওই আঙ্গুল এ লাগানো ঘন্টির আওয়াজ ছিল মধুর, আর রাস্তায় তখন এত বিরক্ত হওয়া অহংকারী হর্ন বাজতো না, তাই ওই ঘন্টি শুনতে পেতো ট্যাক্সিওয়ালারাও.
খাবার সময় পেরিয়ে বাড়ি যাবার মদ্দে ছিল নিয়ম ভাঙার আনন্দ, আর আড্ডা তা কে টেনে টেনে নিজের জগৎ এ থাকার প্রচন্ড ইচ্ছে, তাই প্রায়শই চরৈবেতি পৰ বেড়ানো আড্ডা শেষ হতো দক্ষিণ কলকাতার কোনো এক মোড় এ, যেখান থেকে রিকশা পাওয়া যায়. বাকি রাস্তা তা দারুন আড্ডা হতো সেই রিকশা বলার সাথে. একবার এক রিকশাওয়ালা কে অনেক খান দেয়ার করিয়ে রেখে আমরা উত্তেজিত আলোচনা করছিলাম JEE দেবার কিছু সমস্যা নিয়ে. শেষমেশ সবাই হার মেনে নিলাম দেরি হবার বকা খাওয়ার কাছে, আমি উঠলাম ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা রিকশা তে.
যথারীতি আড্ডা শুরু করতে যাবো, তখন সেই চালক আমায় প্রথম কথা বলে একদম অবাক করে দিলো, কারণ যে সহজ উত্তর তা আমরা কেউ ই পাচ্ছিলাম না JEEর ব্যাপার এ সেটি সে এক বাক্যে বলে দিলো. আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা সে বাকি দুজনের সামনে বললো না কেন? বলে সে...কি লাভ? জানলাম, সে ছিল রীতিমতো পাশ করা chemist , ছিল ভালো চাকরি, ছিল সে সৎ.
এক ডাক্তার এর ভুল বাঁচাতে সে ভুল চাপানো হলো আমার সারথি কে, জেল এ যেতেও হয়েছিল তাকে, জেল খেটে ফিরে এসে সে তার সমস্ত সার্টিফিকেট পুড়িয়ে দিয়ে রিকশা টানা শুরু করে, এখন তার আছে বাড়ি, বৌ, এক ছেলে যে ভালো পড়াশুনো করছে. জানতে চাইলাম, তোমার প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছে করে না? জানতে পারলাম কি বললো, মুখ ফিরলো না, সিট ছেড়ে রোগ শরীর তুলে সে দেন পড়লে এ আরো জোরে চাপ দিলো.
বোনকে কোলে নিয়ে মা বসতো বাঁ দিকে, আমি বসতাম পাশে, চারি দিক এ মানুষের মাথা তখন আমার হাত এর নাগাল এ, কলার ঝুড়ি থেকে কলা নিলে বকা খাবো, কিন্তু ভাবতাম চেষ্টা করি, তুল্লে কি আদৌ বুঝতে পারবে? ঝাঁকি কি নড়বে আমার নিপুন হাত এর কুকাজ এ? আমি তো তখন একহাত এ ম্যানড্রেক, অন্য হাত এ লোথার.

কলকাতার যে দিক টা ছোট থাকার সময় দেখিনি, সেটা দেখবো বলে গেলাম হাওড়া ব্রিজ এর তলায়, এল ছায়া ভরা এক অদ্ভুত জায়গায়, ফুল এর বিক্রি, দুরন্ত ভিড়, তার ই মাঝে ঘুমিয়ে পড়া দুটি পা,অথবা হটাৎ কোনো মাতাল এর ব্যাম করা শুরু, পরক্ষনেই ব্রুস লি এর pose নেওয়া.
কেজো গরিবেরা বড়োই সাধারণ, বোরো অসহায়, আর কি ভীষণ খুশি তাদের যা আছে তাই নিয়ে.
তাদের কে দেখলাম যেন অন্য কোনো শহর এ কারণ এই কলকাতা তো আমি দেখিনি আগে. ছবির সাথে তাদের গল্প নিয়ে চললাম, আসুন পাতার পর পাতা খুলে দেখি তাদের হাসি-দুঃখ-ওঠা পড়ার নদী বেয়ে যাওয়া...
এ বারের কলকাতা যাওয়া মানুষ দেখার জন্য এমন টা বলাই যায়, তাদের মধ্যে আমাকে দেখা..

অপেক্ষা, ইতির অপেক্ষা

এবার এ ফিরে দেখলাম কলকাতা থেকে হাত টানা রিকশা প্রায় উধাও, আছে তারা হাওড়া ব্রিজ এর তলায়, পেলাম দেখা AJC Bose রোড এ....রাত এর অন্ধকার এ ল্যাম্প পোস্ট ছাড়িয়ে মিশে যেতে... মনে হলো ক্রমশ তার পা গুলো চলতে চলতে ক্ষয়ে যাচ্ছে, রিকশা নিয়ে সে উঠে যাচ্ছে আকাশে,আজ তার আর আমার ওড়ার দিন, বাঁচার দিন...


ছোটবেলায় মাটি তে থাকতাম বেশি, বোরো দেড় পা দেখতাম নানান রকম, মাসি দেড় টা জল এ হাজায় বিক্ষত, মেসোদের টা রাস্তার সাথে লড়াই এ আহত. সেই পা গুলো জীবন এর গল্প বলতো, তাদের সফর এর গল্প 

এই তামাক কাটা লোকটির ইচ্ছে ছিল আমি তার মুখের ছবি নেই, সে যে তখন গ্রিক সৌন্দর্য প্রতীক যুবক.

দুই শ্রমিক অপেক্ষায়...পাশের লরি খালি হলে তারা পাবে কাজ, দিন এ আসবে কিছু টাকা

এ ভার সে রোজ তোলে, যুবক টি ও জানে, তাই এ বুড়ো মাল তোলার মূল জায়গায় দাঁড়িয়ে, বাকি তার নির্দেশে এ মাল মাথায় বইছে...এ অভিজ্ঞতা নিয়ে সে দুটি টাকা পাবে ওই যুবক এর থেকে বেশি

সংসার বোধয় এপার এর ফুটপাথ, ও পার এ জমায়েত রোজকার ব্যাপার , কিছু আড্ডা কিছু কাজ এর কথা, এপার এ রান্না-ও ভগবান নিয়ে থাকা 

দুপুর শেষ একটু সময় পেলে ওই যায়না তে মেয়ে নিজেকে দেখবে, নিজেকে চুপিমন এ বলে

এক সন্যাসী হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে এই আধো অন্ধকার ব্রিজ এর তলায়, যেন তার কথা ছিল আশার বাণী শোনাবেন সবাই কে, এখানে পৌঁছে দেখেন আশাও আশা করেনি কখনো 
সামান্য কিছু আলো তার চারিদিক এ জ্যোতির মতো ঘিরে, জন অপেক্ষায় আছে, ভবিষ্যৎ বাণী বেরোবে তেমনি আলোর মতো ঠিকরে বা ঠুকরে

কিছু আরো বেশি দিলে ট্যাঙ্কার যাবে দাঁড়িয়ে, নিয়ে নিও আরো দু বোতল জল, তাতেই সমুদ্দুর ভরা আনন্দ, ফাউ জল এ তে চান করে নেয় নিতাই বা নয়নতারা, মার্ যে সময় বাড়ন্ত

মাতালের যোগব্যায়াম ও এক সন্ন্যাসী

জানিনা কোনোদিনও ওই লরী নড়বে কি না, বা হয়তো দুপুরএই যাবে পাটনা,
মৌরসি পাট্টা আমার দোকান ভরে, কিনলে যেন ঠকবে না

বহুকালের ফুলের বাজার ও আজকের মোবাইল কলকাতা
সারাদিনএর খাটনির পর র মন থাকেনা শাসনে,সে খোঁজে মদ এ হতাশার বিষ মরণ
কেউ কেউ ছোট দিনের বেলাতেই, কে জানে আজ দিনটাও পুরো পাবো কি না...
এক মাতাল তার ফিটনেস পরীক্ষা দিচ্ছে আমার সামনে, ওই ভিড় এ চন্দ্রাসন করে দেখিয়ে..

এ প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাবে সবার চোখে, কার হাতেই বা কি বদলানোর আছে

এ বারের কলকাতা যাওয়া মানুষ দেখার জন্য এমন টা বলাই যায়, তাদের মধ্যে আমাকে দেখা


আজকের দূর্গা, মার্ ডাক এ নিয়ে যাবে বাকি বালতি গুলো, জল ভরা এখনো বাকি

হিরো

দিবাস্বপ্ন , তোমার মতো আমার ও আছে


আমার মনে হয়েছে ওই rebar গুলোতে হাত বুলোনো তে এই ভিখারি জীবন ভেঙে বেরোনোর এক আকুল ইচ্ছা ছিল, এ ফুটপাথ ছেড়ে, শত বিপদ জেনেও বেরিয়ে পড়ার ইচ্ছা


নিত্তনৈমিত্তিক নাসিকা তলের সাজগোজ
ঘুম

শিশু

যে যেমন থাকে এই পৃথিবীতে তারা তাতেই যেন খুশি, মেনে নেওয়া আমাদের অভ্যেস, ভুলো না, সে আমাদের ভবিষ্যৎ বলে যে কেউ কখনো বলে উঠতে পারে,যেমন পারে এই লরি টা 
মোবাইল তাদের দিলো আরো বেশি যাদের ছিল বেশ কম, দিলো পরিবার এর ছোঁয়া, হয়তো ফিরিয়ে দিলো রোজকার এর খুনসুটি, বৌ এর বকাটাও

















Comments

Popular posts from this blog

Kolkata-25-Jan

   

COC family day

 Be together, be together, come what may, be together. Think about love, think about  time to come, love thy children, and their world. a few photos of the annual family get together in COC family day, 27th September, 2025.

Chennai light and colours

Chennai Love, light, speed, system and love with respect.  Freedom with responsibility.  Colours with fresh air and wonderful morning light.