Skip to main content

#Pushkar - 2019 Oct

পুষ্কর এ বাস থেকে নামার আগেই জানতে পারলাম সেখানে অঢেল ধর্মশালা এক গলি তে, বাস স্ট্যান্ড এর সামনেই একটু এগিয়ে। সে গলি তে গিয়ে প্রথম ধর্মশালা তেই এক ছোকরা র প্রশ্নে আমি ভ্যাবাচ্যাকা।!
কি জাত আমার, কারণ ওখানে বৈষ্ণব জাত কেই শুধু থাকতে দেওয়া হয়। সেরেছে কম্মো, ছোটবেলায় কাঁদলে খাবার পেতাম, রাগ দেখালে উপহার তাই তখন ছিলাম বৈশ্য। স্কুল এ গিয়ে হলাম ব্রাহ্মণ, তত্ত্ব জানলাম, মূল কেউ শেখালো না। চাকরি করতে গিয়ে হলাম শূদ্র, বস এর ভুল ধারণা পরিষ্কার করলাম প্রতিদিন আপ্রাণ খেটে। নানান ভাবনা-চিন্তা, ঘটনা, বাজে বকবক আর সবার বক্তব্য জুড়ে জুড়ে এক একটা পেট্রোকেমিক্যাল প্লান্ট বানালাম, যাতে সহজেই পৃথিবীর পেট ফাঁক করে ওর সারা ত্বকে ক্যান্সার ছড়িয়ে দিতে পারি। আমার তাহলে কি সঠিক জাত?
পরের ধর্মশালায় পরিষ্কার বললো কাল থেকে অনেক লোক আসবে তাই আজ আমায় জায়গা দেবেনা। প্রমাদ গুনতে শুরু করেছি ততক্ষনে, পুরোনো এক অভিজ্ঞতা মনে পড়লো, পালিতানায় আমি একা বলে কোনো ধর্মশালায় আমায় জায়গা দেয়নি, পরে শুনেছিলাম, ওখানে কোনো একজন আগে নাকি একা এসে আত্মহত্যা করেছিলেন তাই, রিস্ক নেয়না কেউ। পরে শুনেছিলাম, পালিতানা তে ডিম ও তার থেকেও ভয়ানক কোনো আমিষ খাবার নিয়ে ঘোরা আইনত অপরাধ। অথচ গাছ মারা অপরাধ নয়। ফিরে এসেছিলাম সেই দিনই, ওই এক পাহাড়ের ওপর ৯৯৯ টা মন্দির সেবার দেখা হয়নি।
এবারে ওরকম মাথা গরম করলাম না বলে আরো দুটো ধর্মশালা ছাড়িয়ে পেয়ে পেলাম থাকার জায়গা, তিনশো টাকায় বাথরুম সহ জোড়া বিছানাময় এক ঘর। আর চিন্তা নেই, যে কোনো দিকেই ঘুমাতে ঘুমাতে ঘুরি না কেন, মাটিতে পরে যাবোনা। ভাড়া মোটে তিনশো টাকা। সঙ্গে ষাট টাকা দাও যত খুশি খাবার খাও, অবশ্যই নিরামিষ।
কিছুক্ষন আরাম করে বেরোলাম পুষ্কর দেখতে, বলা ভালো মানুষ দেখতে, ও পুষ্কর কে মানুষের চোখে দেখতে।
বেনারস এর পশ্চিম পাড় কে ধরে যদি গোল করে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে মাঝে জমানো গঙ্গা হবে পুষ্কর, মানে দীঘি, যেখান থেকে এই জায়গার নাম হয়েছে বলে আমার ধারণা। সেই দীঘির ধার বাঁধানো, আগাগোড়া। তার সঙ্গে আছে নানান মন্দির সীমানা জুড়ে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্রহ্মা মন্দির।
ধরলাম সে রাস্তা। রাস্তায় নানান গল্প আলোয় মাখামাখি। চালাক সাধু সেখানে ভয় বিক্রি করছে ভগবান এর নামে, এক দোকান এর পাশে সরু সিঁড়ির মুখে দুই কিশোরী পিঠে রোদ মেখে চুল খুলে নিজেদের গোপন গল্প ভাগাভাগি করছে, চোখে তাদের সে কি মায়া, রোদ পড়ে নিজেই ধন্য। সামনে দিয়ে মা আসছে মেয়ের স্কুল এর খবর নিতে নিতে, সঙ্গে চলছে সমান তালে বকাবকি। সবাই সেই ছোট্ট গলির ভেতর দিয়ে আলো-অন্ধকার সরিয়ে সরিয়ে, সদ্য আসা ভক্ত কে পাশ কাটিয়ে, গাঁজা খাওয়া মাসখানেক চান না করা শত-অষ্টনামের চাদর জড়ানো ফিরিঙ্গি কে বাঁচিয়ে চলেছে। যেন এক বড়োসড়ো ঘড়ির কাঁটা, যার ওপর ছবি প্রতি মুহূর্তে পাল্টাচ্ছে যেমন যেমন যে ঘুরছে। এ দেখা যে কি পাওয়া সে কি বলবো!
দোকান চারিদিকে হরেকরকম, কিছু উপহারের, কিছু পুজোর, কিছু আবশ্যিক। আর আছে কিছু ছুরি-গুপ্তি-তলোয়ারের দোকান। ক্ষত্রিয় শিশু মন দুচারবার পাক খেলো সে দোকানের সামনে, দোকানি ও বুঝে গেলো আমার সীমা, এমন সময় এক মহিলা এসে হাজির আর এক মহিলা পুলিশ নিয়ে সে দোকানে, ছুরি কেন ছয় ইঞ্চির বেশি হলেই বিক্রি করা উচিত নয় এই দাবি নিয়ে। দাবি ন্যায্য কারণ ওনাকে তো এক মহিলা পুলিশ ধরেছেন ওরকম এক ছুরি নিয়ে ঘুরছেন বলে। মানে মানে কেটে পড়লাম সেখান থেকে।
ব্রহ্মা মন্দির দেখার ইচ্ছে ছিল, বাদ সাধলো ভয়। মন্দির প্রশাসন এর ভয় যে মন্দিরে গিয়ে যারা ছবি তোলে তারা যদি সবাই আতঙ্কবাদী হয় তো? আর আমি গোঁয়ার, ক্যামেরা না গেলে আমার যাবার কি মানে!
তর্কাতর্কির শেষ হলো নিরুপায় পুলিশ এর চুপ করে যাওয়ায়, ঠিক করলাম এর বদলে পেছনের পাহাড় এ আজকেই যাই, ওখান থেকে পুষ্কর কে দেখবো।একটু পরেই সূর্য ডুববে, পুষ্কর আলো জ্বালাবে, ব্রহ্মার থেকেও ওপর এ বসে পুষ্কর দেখবো। এবারে পুষ্কর-মানুষ দেখবো বাকি দুদিন ধরে সেটা ততক্ষনে বুঝে গেছি। এ জায়গা বড় মায়ার, একে এর মানুষ নিয়ে এতো সহজে এক দিনে দেখে যাওয়া যাবে না। আজমের যাবো সঙ্গিনীর সঙ্গে, তাঁর পুরোনো প্রেম, দু বছর এর থাকার স্মৃতি দেখবো তারই সঙ্গে তাই এবেলা শুধু পুষ্কর মানুষ দেখায় থাক।
দীঘির পেছনে সে পাহাড়ও মন্দির এর দাস। সাবিত্রী মাতা পাহাড় নাম তার, ওপর এ অধিষ্ঠিত এক মন্দির। দড়িতে বাধা কাঁচঘর এ বসে ওপরে যাওয়া বেশ রোমাঞ্চকর। আসা-যাওয়া নিয়ে ভাড়া ১৬০ টাকা একেকজনের। গেলাম আমি একে, সারা পাহাড় ও পুষ্কর দেখতে দেখতে, হটাৎ খেয়াল করে দেখি ওপরে এ প্রায় এসে গেছি, আর ওপরে থেকে আমায় তুমুল বকছে কেউ। আমি যে বসা ভুলে উত্তেজনায় ওই কাঁচঘর এর চারিদিক এ ঘুরে ছবি তুলতে আর দেখতে ব্যস্ত। বুঝলাম, আমায় নিয়ে আমার স্ত্রী এতো উদ্বিগ্ম কেন থাকেন। ভাগ্য ভালো যিনি বকছিলেন তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি, ওখানে ওই রোপওয়ে এর সব কর্মচারীই বাঙালি, নিজের লোককে কে না চেনে, তাই তাল সামলানোর বিপদ আর বোঝালেন না আমায়। আমি "কি কেমন সামলালাম বোলো" বলতে গিয়ে দেখি পাশের সঙ্গী তো আজ নেই সঙ্গে, আজ আমার একার ঘোরা।
ওপরের মন্দির এ ঢোকার সাহস আর করলাম না, ভগবান এর ঘরের পেছনের দরজায় দেখি নানান কান্ড ঘটছে চুপচাপ, ভক্তি ঘুরছে তার চারপাক, চটি জুতো রয়েছে দরজার পাশে, স্ত্রী বলছে মাফলার ভালো করে জড়াতে তার বয়স হয়ে যাওয়া কর্তা কে, হাজার হলেও ১০০০ ফিট ওপরে এ ঠান্ডা তো বেশি হবেই, সঙ্গে আছে হাওয়া। পশ্চিম এ হেলানো সূর্যের আলো দরজায় ছায়া আঁকছে, যেমন লাইন টানে দেয়ালে বাচ্ছারা। দুটি কমবয়সী ছেলে একটা ক্যামেরা নিয়ে কসরত করছে। তাদের বেশ আগ্রহ আমার ফিল্ম ক্যামেরা স্বরূপি বস্তু টাতে। আলাপ হলো সেই সূত্রেই, দুজনেই পড়ছে JNU তে, একজন মাস্টারি করবে রসায়নে, অন্যজন শিল্পের বোধ নিয়ে পড়ছে, এস্থেটিক্স অফ আর্ট। আমার প্রচুর প্রশ্ন উড়ে গেলো দ্বিতীয়জনের প্রতি। কি ধৈর্য তার।
ততক্ষনে এক পায়রা গিয়ে বসেছে ল্যাম্পপোস্ট এ, গোটা সূর্য কে আড়াল করে আমার সামনে নানান দৃশ্য তুলে ধরলো, আড্ডা ছেড়ে ছুটলাম সে সময় থেকে ছবি ধরবো বলে। বোধহয় ছেলেটি হাফ ছেড়ে বেঁচেছিল।
সুমিত্রা পাহাড় পাশ থেকে দেখতে উটের পিঠের মতো, তার গোড়ায় যে রাস্তায় পাশের গ্রাম এ জায়রোজ, প্রতি গাড়ির সঙ্গে, সে নিকষ কালো, ওপরে থেকে তাকিয়ে যেন চাক্ষুষ দেখলাম আমি লালমোহন বাবুর সঙ্গে চলেছি পরের রহস্য ঘাঁটবো বলে, তোপসে গাইছে গান, "দেখো রে"।
ততক্ষনে এক যুবক পাহাড় এর শেষে নিজেকে একলা করে আরো পশ্চিমের মরুভূমির মাটি আর আকাশ কে মিশতে দেখছে, কয়েকটি ইজরায়েলি ছেলে মেয়ে গিটার ও উকুলেলে নিয়ে এসেছে সন্ধ্যের সঙ্গে নিজেদের কে মেশাবে বলে। হাওয়ায় ঈষৎ ঠান্ডা ছোঁয়া, আকাশ এর রং আকাশি লাল-হলুদ-নীল। কাঁটাগাছ আর চড়াই পাখির তলায় পড়ে থাকা সাদাপাথর সবার রং ধরতে ব্যস্ত। কখন যেন সব শব্দ তুচ্ছ হয়ে গেলো, নিস্তব্ধ হলো বাকি সব বোধ, শরীর জুড়ে সে পশ্চিম আকাশ-মাটি পাহাড় সিঁধে কেটে ঢুকে গেলো, আমার কিছুই করার রইল না বাকি।
পুবপারে পুষ্কর বিন্দু বিন্দু আলোর ইম্প্রেশনিস্ট ছবি হতে থাকলো।
আমি নেমে গেলাম কাছের বস্তি তে, আসার সময় সেখানে একটি মাত্র দোকানে দেখেছি এক যুবতীর তীক্ষ্ণ চোখের দুর্জয় সাহস, গলায় চিলের আওয়াজ, অথচ মুখ প্রায় সবটাই ঢাকা প্রথায়।
জিজ্ঞেস করায় সে চোখ বেরিয়েছিল মুহূর্তের জন্য, দোকানের বাকি অন্ধকারে সে যেন সিংহীর চোখ, জবাব পেলাম জলের বোতল এর দাম ছাড়া বাকি টাকা ফেরত পাওয়ায়।
সন্ধ্যে তে সেখানে অন্য প্রথার মন্স সেজেছে, পাড়ার মোর অশ্বত্থ গাছের গোড়া বাঁধানো সিমেন্ট এর বেদি তে সব বাচ্ছারা সাজাচ্ছে প্রদীপ, আজ যে দীপাবলি।
চোখে তাদের সত্যি কারের ভক্তি, আনন্দ, আশা। পাশে কোনো বড়রা নেই, তারা বাড়িতে, বাজি তেমন পায়নি তারা, আয় তো সামান্য। সে গাছের তলার অন্ধকারে ওই সামান্য প্রদীপের অসামান্য মসৃন নরম আলোর আভা যখন গাছের শিরাউপশিরায় ছায়া কাঁপাতে কাঁপাতে সরাতে থাকলো, পাশে পড়ে থাকা এক সাইকেল ও একটা ঠেলাগাড়ি দর্শক হয়ে থাকলো আমার সঙ্গে।
বাচ্ছারা লাজুক, আবার কৌতূহলী ও,তারা জানেই না চিরকালীন তাদের এই প্রথার আলো যে বিশ্বাস থেকে এসেছে, সে ভরসার বিশ্বাস কত নিরুপায়!
ভাইসাব, আপ জানতে হো ইয়ে জয়পুর ঘাট কাহাঁ হোগা? - দেখি এক চওড়া কাঁধ চকচকে করে কামানো মাথার এক লোক আমায় পাশ থেকে ডাকছে।
জয়পুর ঘাট এ গান বাজনা ও নাচ হচ্ছে শুনে আমিও খুঁজতে শুরু করলাম ওনার সঙ্গে। যাওয়ার পথে উনি আমার সমস্ত তত্ত্ব তালাশ জানার পরে নিজেকে বললেন এক মামুলি মানুষ। তা সেই মামুলি মানুষ কোন কাজ করেন জানতে চাইলে বললেন, উনি রাজনীতি করতেন আগে, এখন উনি যোগব্যায়াম এর গুরু, ছবি তোলার অজুহাত এ ওনাকে আগেই হারিয়ে যেতে দিলাম
জয়পুর ঘাটে বেশির ভাগ বিদেশী আসেন ও থাকেন বলে ওখানে নানান শিল্পী কিছু পয়সা পাবার আশায় যান তাদের কাজ দেখাতে, সে গান বা নাচ বা অন্য আরো কত কি।
ওই ঘাটে তাই আলোর জাকজমক বেশি সঙ্গে আমার মতো ফাউ রাও জুটে যায়।
ঘাট এর দুই ধরে দুই অশ্বত্থ গাছ, তার বেদি ও নানান ঠাকুরের ছবি বা মূর্তি রাখা। উত্তর এর গাছ এর তলায় এক সাধু তার আস্তানা গেঁড়েছেন দেখলাম, তার সামনের বেদির পরিষ্কার করা জায়গায় বসলাম কারণ ততক্ষনে তিনি আপন মনে গান ধরেছেন।
চেরা গলা, ভাঙা গাল, সাদা চুল দাড়ি সাধু এক গাছের তলায় তার একতারা নিয়ে সাবধান করছেন, শরীর এক ঘোড়া, সে দিক হারাবেই তাকে বেশ এ রাখার জন্য মনের চাবুক ছেড়ো না। আমি তখন মনের হিটলারি চাবুক এর জোরে নানান ছবি তুলে চলেছি। ইতিমধ্যে এক ইতালিও মহিলা এসে ওনার হাত ধরে প্রণাম করে আমার পাশ দিয়ে যেতে যেতে বললেন, এই সাধু নাকি দারুন গান ও নাচ করেন, ওনার বড় দল রয়েছে, আসবে তারা কদিন পরেই। এমন তাঁর গানের টান যে পাশে এসে জুটলেন আর এক সাধু, কিন্তু তাঁর তাল বোধ কম। আমি ততক্ষনে সরতে সরতে প্রায় ওই প্রথম সাধুর পাশে। দেখি ডান দিকে ও সামনে মিলিয়ে তাঁর রয়েছে গোটাকয় পুঁটুলি, তাতে কিছু জামা কাপড় ও থালা বাটি। সামনে গাছের তলায় নানান দেবদেবীর ছবি, ফ্রেম এ বাঁধানো।
এমন সুন্দর গান এ শুধু তালি বাজিয়ে তাল রেখে মন ভরছিল না, তাই ওনার কাছে একটা বাতি চেয়ে নিলাম, পাশের বেতাল সাধু ঝিন্ঝিনি আপন তাল এ বাজিয়ে চলেছেন। প্রথম সাধু ধরলেন দ্বিতীয় গান। মনে হচ্ছে ওনার ই বানানো। আরো কাছে এসে দেখি ওনার চোখ আকাশ পানে, কথা বলছে মহাকাশে, দাড়ি-চুল ধূসর হয়েছে ধুলো ও অযত্নে, ভাঙা গাল প্রায় একে অপরকে ছুঁয়ে ফেলে, লম্বা দাড়ি গোটা গলাটাকে ঢেকে ফেলেছে বলা যায়। গায়ের ফতুয়া সাদা ছিল একসময়, ধুতির রং বোঝা গেলো না। একসময় গান গাইতে গাইতে ওনার হাসি ফুটলো, যেন গান ওনার আপন রাস্তা বানিয়ে সারা পুষ্কর এর সব খোলা দরজা-জানালা খুঁজে ছুটছে, সবাই কে বলবে সবার সঙ্গে বাঁচো, উনি সেটা তখন বুঝলেন। প্রথম গান এর কিছুটা ও দ্বিতীয় তা ততক্ষনে রেকর্ড করে ফেলেছি। একটু দূরে গিয়ে শুনে মুগ্ধ আবার হলাম। কিছু আরো ভক্ত জুটেছে আশেপাশে, গাঁজার ভক্ত, বাবার কাছে, পাশে বসে খাবে। আমি আমার প্রশ্ন করেছি শুরু। ওনার নাম রাধেশ্যাম দাস। জানতে চাইলাম কার দাস উনি, স্পষ্ট জবাব শান্ত ভাবে দিল, উনি রাম এর পথের পথিক। বললেন, আছেন এখানে দিন পনেরো হলো, আরো কিছু দিন থাকবেন, ওনারা চাঁদের হিসাবে চলেন। যাবেন পরে অন্য কোনো তীর্থে। না কোনো চিন্তা নেই, যে ভগবান এতো বড় আকাশ, পাহাড় পুকুর দেন, খাবার ও তিনিই জোগাবেন এ তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস। সে বিশ্বাস তাঁর চোখের চিকচিকে হাসি আরো বলে দিলো। তখন দেখি সেই ইতালিও মহিলা কিছু খাবার নিয়ে হাজির। উনি শান্ত ভাবে সে খাবার নিলেন, যেন জানতেন।
আমি জানি আমার বিশ্বাস নেই এতটা আর আমার খাবার ধর্মশালায় আর থাকবেনা যদি আমি আরো দেরি করি, তাই বিদায় জানিয়ে হাঁটা দিলাম গলিঘুঁজি পেরিয়ে।
ধর্মশালায় এসে দেখি আমি আর একা নই, একদল এসেছে কাল চান করবে বলে।সক্কাল সক্কাল উঠতে হবে তাই তাদের খাওয়া শেষ, ঘুম প্রায় শুরু। আমিও খেয়ে এসে দাঁড়িয়ে রইলাম লম্বা চাতাল এ।সে উঠোন এর একপ্রান্তে রয়েছে কৃষ্ণের মতো বেকা হওয়া এক গাছ। তাঁর পেছনের এল সে গাছের ছায়া ছড়িয়েছে সারা উঠোন জুড়ে। আর যে কোনো এল নেই। ওই একলা উঠোনে দাঁড়িয়ে আমি ভাবলাম,কাল সকাল এ আলো ফুটলে এই ছায়া তো আর থাকবে না, তাহলে ছায়া কি, আমার ছায়া কে, আমার আনন্দ না দুঃখ না আমার কাজ? আমিই বা কে? এই যে নানান রকম মানুষ পেলাম সঙ্গে, তারা করা? আমিই কি?
কাল সকালে নাহান হবে, মানে চান, সারা ঘাট ময়, উঠতে হবে সকালে। প্রশ্নের মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করে শুতে চললাম, অনেক হাঁটা হয়েছে আজ, শরীর ঘোড়া ক্লান্ত নিজেই।
কাল দেখবো আরো পুস্কর তাঁর মানুষের বিশ্বাসের ভিড়ে।






Comments

Popular posts from this blog

Rabindrasangeet in 100 voices - Rehearsal in Chennai

 Rabindranath and his songs, Rabindrasangeet is every Bengali's colour of their culture, essence of their values. Chennai has many Bengalis living their life in a different geographical and cultural world here. A group of people, friends had taken an initiative to sing Rabindrasangeet in a group, a large group rather, counting nearly 80. They will sing 20 songs all together, once, on stage. To do this, with so many members to be in sync, they are practicing for months. This session is one of them.

KGL-Kashmir Great Lakes Trek

 Whatever you say, Things to do before you die, Bucket list, must visit places on Earth...Kashmir remained in all those lists, for me. Then, I have a book, name Witness, a photo book of journalistic photo of Kashmir, images of Kashmir troubles. Interestingly, which the editor of the book also exclaimed, that there is no image of Kashmiri Hindus being fled or extracted from Kashmir. With this complex state of visions, news, anger, frustration, religious bias beneficiaries one thing remain same and true to my existance, that I have to see Kashmir. And I do not want to see tourist Kashmir, I want to see Kashmir as Kashmiris see.  Their, my first step or plan you can say is to have a trek to reach deep inside of Kashmir, where Kashmiris are with Kashmir and themselves. Hence Kashmir Great lakes happened.  Images, I want to speak for themselves, only when I want to say something more of my vision, I have added some notes on top of those images. Curfew sick Daal lake on August 7th, 2022. Thr

Tanjavur - 2023 December end

The evening in Brihadeshwara temple, Tanjavur